হিন্দু সংস্কৃতির ক্রম-অবক্ষয়ের মূল কারণ || সচেতন হোক সকলে!
- Krishnashish Chakraborty
- Dec 23, 2020
- 2 min read
প্রশ্ন:- হিন্দু তথা হিন্দু-সংস্কৃতির ক্রমশ অবক্ষয়ের কারণ কি?
★প্রশ্নের উত্তরে শঙ্করাচার্য্য নিশ্চলানন্দজী:- আমাদের মনে যে সংস্কার এবং যোগ্যতা রয়েছে তার অতিক্রমণ করে আমরা স্বপ্নও দেখতে পারি না। ভারতীয়দের উপর শাসন করবার উদ্দেশ্যে ব্রিটিশরা যে বিকৃত শিক্ষা পদ্ধতি ক্রিয়ান্বিত করেছিল যার দরুন স্বতন্ত্র ভারতে ভারতীয়রা আজও চিন্তা-চেতনায় ব্রিটিশদের ক্রীতদাস হয়ে আছে। এমতাবস্থায়, পরিবারে ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক পরিবেশ না থাকার দরুন ছেলে-মেয়েরা বিপথে চলে যাচ্ছে। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা, টিভি চ্যানেল ও অশ্লীল বেশ-ভূষার মাধ্যমে নারীদের দেহকে বিকৃত আকর্ষণের কেন্দ্র বানানো হয়েছে। আধুনিক সভ্যতার নাম করে অশ্লীল মনোরঞ্জনতা ও মাদক দ্রব্যের গ্রহণের পরিবেশে এই যুগে যদি কোন তরুণ-তরুণী ভারতীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে লালন করে সেটাই বরং আশ্চার্যজনক। একটি ঘটনা বলছি শুনুন--- উড়িষ্যার নিবাসীদের কর্তৃক নির্মিত দিল্লিতে একটি জগন্নাথ মন্দির রয়েছে। রাতের বেলায় ঐ মন্দিরের পাশের রাস্তা দিয়ে হাঁটলে আপনি পুলিশের বাঁশির আওয়াজ শুনতে পাবেন। তার কারণ হলো ঐস্থানে সরকারী লাইসেন্স প্রাপ্ত মদের দোকান রয়েছে। যেখান থেকে রাতের বেলায় তরুণ তরুণীরা মদ খেয়ে রাস্তায় নেমে উপদ্রব করে। এখন লাইসেন্স প্রাপ্ত দোকান বিধায় পুলিশতো কিছু করতে পারে না, তাই লোক দেখানোর নিমিত্তে নামমাত্র বাঁশি বাজিয়ে উপদ্রব কমানোর বৃথা প্রচেষ্টা করে। আধুনিক সংস্কৃতির নাম করে বিভিন্ন প্রকারে মাদকদ্রব্য ও অশ্লীল মনোরঞ্জনকে উদ্ভাসিত করার দরুন আজ তরুণ-তরুণীরা দিশাহীন হয়ে পড়েছে। অবশ্য, যেখানে নীতি ও আধ্যাত্মিকতা সম্পর্কিত শিক্ষা পদ্ধতির বিলুপ্ত হয়েছে সেখানে প্রত্যেক ব্যক্তির মস্তিষ্ক ও হৃদয় যে কলুষিত হবে এটাই স্বাভাবিক। তাই এই পরিস্থিতির আমূল-পরিবর্তন সাধনের জন্য সনাতন বৈদিক মান-বিন্দুকে পুনরায় উদ্ভাসিত করতে হবে। কেননা এই রকেট, কম্পিউটার ও মোবাইল ফোনের যুগেও সনাতন বৈদিক সিদ্ধান্ত না কেবল দার্শনিক ধরাতলে উপরন্তু ব্যবহারিক ও বৈজ্ঞানিক ধরাতলেও সর্বোৎকৃষ্ট। এর মাধ্যমেই আমরা ব্রিটিশদের ষড়যন্ত্র থেকে বেড়িয়ে আসতে পারবো।
ব্রিটিশদের কূটনীতি দেখুন, রাণী এলিজাবেথ ভিক্টোরিয়ার থেকেও অধিক সময়কাল ধরে শাসন করছে। ব্রিটিশরা ঠিকই তাদের দেশে রাজতন্ত্রকে সুরক্ষিত রেখেছে অথচ তারা আমাদের ভারতবর্ষে ৭১ বছর পূর্বেই পরম্পরা ধ্বংস করে রেখে গিয়েছিল, এবং আমাদের সুষ্ঠু সনাতন পরম্পরার উপর ইংরেজি শিক্ষা পদ্ধতি দ্বারা আমাদের মনে অনাস্থা উৎপন্ন করে গেছে। আমাদের অনুকৃতি করে তারা তাদের ধর্মগুরু পোপকে তাদের দেশের সর্বোচ্চ ধর্মীয় বিধান-দাতা হিসেবে স্থাপন করেছে। অথচ আমাদের অনুকৃতি করা সত্ত্বেও ব্রিটিশরা আমাদের রাজনৈতিক-শাসনতান্ত্রিক ও সামাজিক পরম্পরাকে বিলুপ্ত করেছিল এবং শঙ্করাচার্য পদকে(যা তৈরীই হয়েছিল শাসনতন্ত্রের উপর শাসন করবার জন্য) নষ্ট করবার উদ্দেশ্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মাধ্যমে একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিকে (গান্ধীকে) 'মহাত্মা' উপাধিতে ভূষিত করেছিল এবং আরেকজন রাজনেতাকে(নেহেরুকে) প্রধানমন্ত্রী করেছিল। এদের এই কূটনীতির দরুন আজ আমাদের শাসনতন্ত্র দিশাহীন হয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয় ব্যাসপীঠের আসনে বিভিন্ন রাজনৈতিক পার্টির লোকজনের আনাগোনাও শুরু হয়ে গেছে। যার দরুন ঐসব তথাকথিত সাধু-সন্তরা দিনশেষে যেন ঐসব রাজনীতিবিদের স্বার্থ-সিদ্ধির জন্য তাদের ইশারায় কাজ করে। আমি কোন রাজনৈতিক দলের সদস্য কিংবা অনুসারী নই সেই কারণে, গত ২৬ বছর ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল কর্তৃক যত প্রকারের যন্ত্রণা আমাকে সহ্য করতে হয়েছে তা বললেও শেষ হবে না। পরিশেষে আমি একটি কথা বলছি মনোযোগ দিয়ে শুনুন----"স্বতন্ত্র হওয়ার পূর্বে ব্রিটিশদের এবং স্বতন্ত্র ভারতে শাসনতন্ত্র কমিউনিস্ট এবং বিধর্মীদের হাতে চলে যাওয়ার কারণে বর্তমানে এই দূর্গতি নেমে এসেছে। এর অর্থ হলো পুরো ভারতকে দিশাহীন করার লক্ষ্যে বিশ্বস্তর থেকে ষড়যন্ত্র চলছে। কারণ ভারত হলো বিশ্বের হৃদয়। সেই ভারত যদি সুরক্ষিত থাকে তাহলে তা সমগ্র বিশ্বকে নেতৃত্বদানে সমর্থ থাকবে।"
হর হর মহাদেব।

Comments