top of page
Search

মূর্তিপূজা বিরোধীদের বেদ দ্বারাই খন্ডন (বেদের নাম ভাঙিয়ে মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে বৈদিক-তোপ)

(মূর্তিপূজা বিরোধী আর্যসমাজী ও কমিউনিস্টদের ভ্রান্ত বেদবিরুদ্ধ মিথ্যাচারের খন্ডন)

কিছু কুচক্রী বিকৃতমস্তিষ্কের সনাতনবিরোধী সংগঠন ও তাদের পালিত বিষধরেরা নিরন্তর বেদাদি শাস্ত্রের‌ নামে অবান্তর অনর্গল মিথ্যা গালগল্প দিয়ে যেভাবে আমাদের সরলমতি সাধারণ সনাতনী মানুষদের ব্রেন ওয়াশ করছেন তা দেখে আর চুপ থাকলে চলবে না। এদের খন্ডন অনিবার্যভাবে প্রয়োজন । না হলে এদের বিষে আক্রান্ত হয়ে আমার বহু সনাতনী ভাই-বোন বিভ্রান্তির অন্ধকারে নিপতিত হবেন।

১.এমন বৈদিক মন্ত্রের প্রমাণ দিন যেখানে মূর্তি পূজার সমর্থণ রয়েছে?

২.প্রামাণ্য যুক্তি দিয়ে বলুন কোথায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তাঁর নিজের মূর্তির পূজা করতে বলেছেন?

৩.আধুনিক বিজ্ঞানে পদার্থের তিনটি অবস্থার কথা বলা হয়েছে। অক্সিজেন চতুর্দিকে ব্যাপ্ত থাকলেও কেনো তাকে একস্থানে সম্পূর্ণ রূপে আবদ্ধ করে রাখা যায় না তেমনি সর্বব্যাপী ঈশ্বরকে কিভাবে একটি মূর্তিতে আবদ্ধ করা হয়?

৪. পাঁচ প্রকার প্রাণসমূহ (প্রাণ,অপান,ব্যান,উদান,সমান) আমাদের শরীরের সাথে সম্পর্কিত । কিন্তু মূর্তির মধ্যে নাক, ফুসফুস হৃৎপিণ্ড,শিরা ইত্যাদি কোথায় থাকে যে তার মধ্যে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করা হয় আর কোনো ব্যক্তি মারা গেলে সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ থাকা সত্ত্বেও কেনই বা সেই মানবশরীরে প্রাণসঞ্চার করা যায় না??

৫.আমরা ভগবান শ্রীরাম -শ্রীকৃষ্ণ ইত্যাদির আচরণকে মানি , যজ্ঞ করি । ভগবান শ্রীকৃষ্ণও তো যজ্ঞ করতেন !

৬.মূর্তিতে ইঁদুর প্রভৃতি প্রাণীরাও অত্যাচার করে ...ইত্যাদি ।

সর্বজ্ঞ ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নিজেই বহু পূর্বে এই সমস্ত বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষকে মায়াবদ্ধ বলে ঘোষণা করে গেছেন।সে যাই হোক, তবুও আমি এসব প্রলাপেরও খন্ডন প্রস্তুত করছি।

প্র:- এমন বৈদিক মন্ত্র বলুন যেখানে মূর্তিপূজাকে সমর্থন করা হয়েছে:-

#খন্ডন:- বেদের কথা বলছেন যখন তবে আসুন বেদ থেকেই আমি উত্তর দেবো।

বেদ প্রধানত মন্ত্র + ব্রাহ্মণ ভাগের সমষ্টি। সর্বপ্রথম আমি মন্ত্র ভাগ থেকেই প্রমাণ উপস্থাপন করছি-

(১.)"সম্বত্সরস্য প্রতিমা অস্তি.." ইত্যাদি অথর্ববেদের মন্ত্রের স্বামী দয়ানন্দ যা অর্থ করেছিল আপনাদের সেটিই দেখাই চলুন -- "বিদ্বান ব্যক্তিরা সম্বৎসরের যে ক্ষণ বা কালাদির বিভাগকারী রাত্রির উপাসনা করেন , আমরাও তাহার সেবায় প্রবৃত্ত হইতেছি "।

এখন এই কথার সম্যক বিচার করলে দেখা যায় যে সম্বৎসর বলতে এক বৎসরের পরিমাণ কালকে বোঝায়। এখানে এর মধ্যস্থিত গুণবিশেষই পরিমাণ বাচ্য।এই কাল ও তার মধ্যেকার গুণ উভয়েই জীবের ন্যায় প্রাণ যুক্ত নয়।যদি আপনি সম্বৎসরের উপাসনা করেন তাহলে তা আপনারই মত এর বিরুদ্ধে যাবে ।কারণ অচেতন কালের উপাসনার এই মন্ত্র নিজেই মূর্তিপূজার সিদ্ধতা প্রমাণ করে(পরিমাণ রূপ গুণ=অচেতন)।

(২.)যজুর্বেদের পঞ্চদশ অধ্যায়ে ৩৫ তম মন্ত্রে "সহস্রস্য প্রমাসিং সহস্রস্য প্রতিমা স....." ইত্যাদি বেদমন্ত্র দ্বারা অগ্নিদেবের সহস্র ইষ্টকের প্রমাণের তুল্য প্রতিমার কথা বলা হল যেস্থানে স্পষ্টতই সাকার পূজা সিদ্ধ হয়।

স্বামী দয়ানন্দ নিজের মতকে স্থাপন করতে গিয়ে এর অর্থ বিদ্বান বিদূষী করেছেন, কিন্তু উনার এই বিবেচনায়, "নিষ্ঠঅগ্নিঃ প্রোক্ষতি হিরণ্যশকলসহস্রেণ......সহস্রস্যেতি প্রতিমন্ত্রম্"(কাত্যায়ণ শ্রৌতসূত্র১৭/১২/১৩)এর মনোকল্পিত ভাষ্যও অপ্রামাণিক বিবেচিত হয়।

(৩.)ঋগ্বেদ সপ্তম মন্ডল ( ৮৯/১২) এ "ত্রয়ম্বকম্ যজামহে সুগন্ধিম্ পুষ্টিবর্ধনম্" মন্ত্রটি প্রযুক্ত হয়েছে ,তার নিরুক্তিতেও "ত্রয়ম্বকোরুদ্রস্তম্.......পুষ্টিকারকমিয়োর্বায়ুকমিব..ভবতি" (নিরুক্ত পরিশিষ্ট) সাকারোপাসনার কথা পরিদৃষ্ট ।

(৪.)"তং যজ্ঞম্বর্হিষিপ্রৌক্ষংন্ন.....সাধ্যাঋষ্যশ্চ য়ে(যজুর্বেদ৩১/৯)এর নিরুক্ত শতপথ ১১/১/৩ দেখলে তার অর্থ এমন দাঁড়াবে যে -- "সাধ্য দেবগণ এবং সনকাদি ঋষিগণ সৃষ্টির পূর্বে উৎপন্ন সেই যজ্ঞসাধনভূত বিরাট পুরুষের মানস যজ্ঞের সম্পন্নতার নিমিত্তে প্রোক্ষণ করেন এবং সেই বিরাট পুরুষের অবয়বেই যজ্ঞ সম্পাদন করেন।"

(৫.)আরো দেখুন , সামবেদের ষড়বিংশ ব্রাহ্মণে -- "দেবতায়তানি কম্পন্তে দৈবপ্রতিমা হসন্তি" ইত্যাদি বচনের উত্তরে #আর্যসমাজীরা সবসময়ই বলে -- "যেদিন এই বিগ্রহগুলি হাসবে ,কাঁদবে , নাড়াচাড়া করবে সেদিন আমরা বিশ্বাস করবো"!

আরে মহোদয় ! ঈশ্বরসন্দর্শনের জন্য চাই ভক্তি ! হৃদয়ে ভক্তিভাব জাগ্রত হলে "যে দিন.."এর অপেক্ষায় থাকতে হয়না ,ভক্তিভাবোদ্রেকের প্রাবল্যে তৎক্ষণাৎই ভগবদ্দর্শন সম্ভবপর। শুধু মুখেই নিরাকার নিরাকার জপ করে কি হবে ??? যদি হৃদয়ে অনুভবই না জাগলো তো ! উপলব্ধিহীন ভক্তিবঞ্চিত সাধনে সাকার নিরাকার কোনোকিছুই মেলে না। ওমন কতো মানুষই তো লোকদেখানো ভন্ডামি করে বেড়ায়, কিন্তু তাতে কি লাভ?? শেষে দেখুন অবসাদেই ডুবে মরছে।

সৎভাব পরায়ণ হলে আপনি নিজেই বেদ থেকে অনেক প্রমাণ পেতে পারতেন। কিন্তু যার মনটাই ময়লা, তার চোখেও ময়লা, সে সর্বত্রই আবছা দেখে। যাহোক ! এবার আসুন আপনাদের সংস্কারবিধি থেকেই আমি কিছু প্রমাণ দেবো-

আর্যসমাজের স্বামী দয়ানন্দ লিখছেন----- "ঔষধে,ত্রায়স্ব" - অর্থাৎ "হে ঔষধি তুমি এই বালককে রক্ষা করো"। আচ্ছা এবার বলুন তো ! তিনি যে এই এই অচেতন তৃণের প্রার্থণায় রত হয়েছেন এটি কি মূর্তি পূজা নয় ??

বি.স.১৯৯৯(1876yr)সনে প্রকাশিত আর্যসমাজের সংস্কারবিধির পুস্তকে একটু খুঁজলেই "ওঁ শিবো নমসি,ওঁ বিষ্ণোদষ্ট্রোঅসি" ইত্যাদি মন্ত্রে ছুড়ি ইত্যাদি অস্ত্রের প্রার্থণা দেখতে পাওয়া যায়, এখানে ছুড়িকে বিষ্ণুর ঢাল বলা হয়েছে, তাহলে এবার আপনারাই বলুন যিনি শুধুই নিরাকার তার আবার ঢাল কিসের????

আপনাদের সত্যার্থ প্রকাশেই ১০০ তম পৃষ্ঠায় "বাস্তুপতয়ে নমঃ" মন্ত্রের উচ্চারণপূর্বক একগ্রাস বাস্তুদেবতার নিমিত্তে উৎসর্গ করতে বলা হয়েছে। এবার এখানে বাস্তুদেবতা বলতে নিশ্চয়ই কোনো মানুষ বা অন্যপ্রাণীকে বোঝানো হয়নি ! সুতরাং এক্ষেত্রে তো আপনারা নিজেরাই মূর্তি আরাধনা করেছেন।

আর্যসমাজীদের সন্ধ্যাবিধিতেও "প্রাচ দিক" - ইত্যাদি মন্ত্রে মনের দ্বারা ঈশ্বরের পরিক্রমার বিধান রয়েছে।এখন ঈশ্বর যদি সর্ব্যাপী নিরাকার মাত্রই শেষ হন তবে তাকে কীভাবে পরিক্রমার ক্ষুদ্রকেন্দ্রে বদ্ধ করা যায়????

এছাড়াও বহুপ্রমাণ আপনাদের পুস্তকের থেকেই আমরা দিতে পারি অতএব দুরাগ্রহ বর্জন করে মান থাকতে সত্য কথাটি স্বীকার করুন, যে--- "ব্রিটিশরা তৎকালীন সময়ে যে আচারঅনুষ্ঠান গুলিকে অন্ধবিশ্বাস বলেছিল আর যেগুলি আমাদের বুদ্ধির অগ্রাহ্য ছিল সেগুলো আমরা(আর্যসমাজী/দয়ানন্দ পন্থী) নিজেরাই ইচ্ছামতো পরিবর্তিত করে নিয়েছিলাম"।

কেন অকারণ মূর্তিপূজার বিরোধ করছেন????

২.ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কোথায় তাঁর‌ নিজ মূর্তির উপাসনা করতে বলেছে???

#খন্ডন:- সারাজীবন কোরান , বাইবেলের নিন্দার সাথে সাথে যদি নিজধর্মের অনন্ত "গীতা" -টিও ভালো করে পড়তেন তাহলে হয়তো কিছুটা হলেও মগজ খুলতো !

যাহোক, আসুন দেখা যাক-

গীতায় অর্জুন জিজ্ঞেস করিলেন:- "এবং সততযুক্তা যে ভক্তাস্ত্বাং পর্যূপাসতে । যেচাপ্যক্ষরমব্যাক্তম্ তেষাং কে যোগবিত্তমাঃ।। (গীতা১২/১)

ভাবার্থ:- নিরন্তর ভগবানের নিমিত্তে কর্মসাধন সম্পন্ন অণণ্যভাবে শরণাগত চিত্তে যারা পরমেশ্বরের সাকার রূপের ধ্যান উপাসনা করেন তথা অন্যদিকে যেসমস্ত জ্ঞানী সর্বকর্মসংন্যাসী সাধকগণ উপরিউক্ত বিশেষণযুক্ত নিরুপাধিক, অব্যক্ত, মন-বুদ্ধি- ইন্দ্রিয়াতীত অক্ষর ব্রহ্মের উপাসক; এই দুইয়ের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম যোগবেত্তা পুরুষ কে???

ঠিক এরপরেই ... ভগবান বলিলেন:- "মযাবেশ্য মনো যে মাং নিত্যযুক্তা উপাসতে। শ্রদ্ধয়া পরয়োপেতাস্তে মে যুক্ততমা মতাঃ।।" (১২/২)

ভাবার্থ:- শ্রীভগবান বলিলেন - যাহারা সর্বকামনা বাসনা ত্যাগী হইয়া অক্ষরব্রহ্মের উপাসনা করেন তাদের কথা এখন থাক। তাহাদের সম্পর্কে আমি পরে আলোচনা করছি।পরন্তু অন্য যে ভক্তরা আমার বিশ্বরূপ পরমেশ্বরে মন সমাধিস্থ করে পূর্বতম অধ্যায়ের অন্তিম শ্লোকের অর্থানুসারে নিয়ত সর্বযোগেশ্বরেরও অধীশ্বর রাগাদি পঞ্চক্লেশরূপ অজ্ঞানদৃষ্টি রহিত সর্বজ্ঞ পরমেশ্বরের উত্তম শ্রদ্ধাযুক্ত মনে উপাসনা করেন আমার মতে তারাই শ্রেষ্ঠযোগী কারণ তারা সর্বদা আমাতেই চিত্তনিবিষ্ট করে কালযাপন করে অতএব তাদের যুক্ততম বিবেচনা করাই উচিত ও শ্রেয়।

আপাতত প্রশ্নের সমাধান হলো কিন্তু এর আরো বিস্তারিত ব্যাখ্যার জন্য যাবো ৫নং প্রশ্নে

৩.আধুনিক বিজ্ঞান পদার্থের তিনটি অবস্থার কথা বলেছে। চতুর্দিকে ব্যাপ্ত অক্সিজেনকে একস্থানে আবদ্ধ করে রাখা যায় না তবে সর্বব্যাপী ঈশ্বরের কি করে মূর্তি সম্ভব হয়???

#খন্ডন:- যারা satelite এ পিতামহ ব্রহ্মার দর্শনের মতো হাস্যকর প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। আর Science Journey নামক অর্ধবিক্ষিপ্ত চ্যানেলে বিজ্ঞানের নামে অপমানিত হন সেই বিশেষ সংগঠনের ব্যক্তিবর্গরা এত অপমানের পরও বিজ্ঞানের নাম মুখে এনে নতুন করে আবার নিজেদের অপমান না করলেই পারতেন । তবুও বলবো শুনুন---

পদার্থের অবস্থা পাঁচপ্রকার( ৪টি প্রাকৃতিক ,১টি মানবনির্মিত),এরপরেও অনুসন্ধান চলছে। আর অক্সিজেনের ওপর আপনারা যে তর্ক উত্থাপন করেন তা সম্পূর্ণই ভ্রান্ত ! আবারও নিজের মূর্খতা দ্বারা এইখানে স্বয়ং নিজ মতেরই খন্ডন করেছেন।কারণ -- পরিবেশে পরিব্যপ্ত অক্সিজেনকে আমরা অবশ্যই সিলিন্ডারে ভরতে পারি । পারলে কখনো ইউটিউব এর দুনিয়া থেকে বাইরে বেরিয়ে আশপাশের কোনো গবেষণাগারে গিয়ে একবার দেখে আসবেন কি করে তারা অক্সিজেনকে সিলিন্ডারে আবদ্ধ করে‌। আর অক্সিজেন যে সাকার রূপে আসতে পারেনা এ কথা কোন বিজ্ঞানী আপনার কানে বললেন হে?? ―১৮২°C তাপমাত্রার নীচে শীতল করলেই অক্সিজেন তরলীভূত হয়ে যায়। ঠিক এভাবেই বিধি এবং ক্রিয়াভেদে ভক্তের ভাবানুসারে নির্গুণ নিরাকার ঈশ্বর দ্রবিত হয়ে ভক্তের ডাকে সাড়া দিয়ে আবির্ভূত হন সগুণ সাকার রূপে।

কখনো দেখছি বৈদিক বিজ্ঞানের কথা বলছেন আবার নিজের ভ্রান্ত মতের পুষ্টির জন্য প্রারম্ভিক অবস্থায় কার্যরত আধুনিক বিজ্ঞানের উদাহরণ তুলে ধরছেন কিন্তু হাস্যকর এই যে সেই তথ্য গুলোও বিকৃত করে পেশ করেন।নিজের মিথ্যাকে সত্যে পরিণত করত কখন যে কি বলেন সত্যিই তা বোঝা বড্ড মুশকিল ‌।

এনাদের কথায় ঈশ্বর সর্বব্যাপক , আসুন এবার এর ওপর একটি উদাহরণ দেওয়া যাক--

" একটি নুনপূর্ণ পাত্রে তো নুন সর্বব্যাপক কিন্তু জলের সংস্পর্শে সেই নুন'ই আবার সর্বব্যাপক নয় কারণ তার মধ্যে জলকণার উপস্থিতি রয়েছে।" সর্বব্যাপকতা তখনই সম্ভব যখন একমাত্র তিনিই সর্বত্র বিদ্যমান রয়েছেন,জগতের বাহিরেও আবার ভেতরেও।ব্যাপকতার মধ্যেও যদি সাকারতা সগুণতা না থাকে তাহলে জগতেরও অস্তিত্ব সিদ্ধ হয় না। যদি এমনই হয় তাহলে তো জলের মন্থনেই মাখন পাওয়া যেত। দেখুন যে বস্তুর বীজ যার মধ্যে নিহিত সেই বস্তুর উৎপত্তি সেস্থান থেকেই সম্ভব। সুতরাং ঈশ্বরে বিবিধ গুণাবলি অবশ্যই বিদ্যমান রয়েছে সেকারণেই তিনি নিজেকে যে কোনো রুপে (জগত রূপে) ব্যক্ত করতে পারেন।বিবিধ বিরোধী গুণাবলীর কারণেই সাকার নিরাকার একসাথে সম্ভব।

(৪.) পাঁচ প্রকার প্রাণসমূহ (প্রাণ,অপান,ব্যান,উদান,সমান) আমাদের শরীরের সাথে সম্পর্কিত । কিন্তু মূর্তির মধ্যে নাক, হৃৎপিণ্ড,শিরা ইত্যাদি কোথায় থাকে যে তার মধ্যে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করা হয় আর কোনো ব্যক্তি মারা গেলে সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ থাকা সত্ত্বেও কেনই বা সেই মানবশরীরে প্রাণসঞ্চার করা যায় না??

#খন্ডন :- মন যদি দুষ্টতার আঁধার হয় তাহলে শত বোঝালেও মানুষ বোঝে না।সাধারন কথাও না বুঝে প্রলাপ বকে। অথর্ববেদের "প্রাণম্ সর্ব উপাসতে " -- এখানে কি আমরা 'প্রাণ', 'ব্যান' ইত্যাদির পূজা করি ????? প্রাণ আসলে কি ?? তার বুঝুন।

দেখুন "প্রাণায় নমো....ভূতঃ সর্বস্যেশ্বরো...প্রতিষ্ঠম্‌।-(অথর্ববেদ)।

এখানে শ্রুতি বলেছেন- "যাহার মধ্যে সমগ্র জগত ও সমস্ত ভূত প্রতিষ্ঠিত তাহাই প্রাণ" আপনি মূর্তিকে জগত আর ভূতাদির অংশ মানেন না ঠিক আছে ,কোনো ব্যাপার না !! তবে প্রাণ কি সেটা একটু বুঝবেন তারপর আসবেন প্রাণের কথা বলতে । শ্রুতি বলেন -- " প্রাণোহি প্রজাপতিঃ"(শঃ ব্রাঃ ৪|৫|৫|১৩ ) --"প্রাণই পরমেশ্বর"। এরপর আসি বৃহদারণ্যক উপনিষদে, যেখানে যাজ্ঞবল্ক্য শাকল্য সংবাদে কথিত হয়েছে-- "প্রাণ ইতি স ব্রহ্ম নদ্রিত্যাচক্ষতে।" অর্থাৎ:- অনন্ত দেবগণের একই প্রাণে(ব্রহ্মে)অন্তর্ভাব ঘটে,সেই প্রাণই সকলের কারণতত্ত্ব।

কিন্তু আপনাদের উপাস্য তো কেবল নিরাকার তাহলে তার মধ্যে আবার পঞ্চপ্রাণের কল্পণা করছেন কোত্থেকে?? তাই চতুর্বিধ প্রাণ এবং প্রাণকে ব্রহ্ম তাৎপর্যে গ্রহণ করুন, তার প্রতিষ্ঠা সম্ভব।উপরিউক্ত উপনিষদের প্রাণ(ব্রহ্ম) প্রতিষ্ঠা বিধিগুলিও একটু দেখে নেবেন।

#দ্বিতীয় তর্ক দিয়েছিলেন মৃত বালকের শরীরে সমস্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গ থাকা সত্ত্বেও প্রাণ প্রতিষ্ঠা কেনো সম্ভব নয় !! আসুন এবার প্রাণের স্বরূপ সম্পর্কে ভালোমতো অবগত হোন------ "সমান উ এবায়ং....স্বর ইতি প্রত্যাস্বর..." (প্রথম অধ্যায়, তৃতীয় খন্ড,ছান্দোগ্য শ্রুতি).

অর্থাৎ:- প্রাণকে খর এবং সূর্যকে প্রত্যাখর বলা হয়েছে।প্রাণকে খর বলার অর্থ প্রাণ খরণ (গমণ) করতে থাকে মৃত্যুর পর তা পুনরায় ফিরে আসে না কিন্তু সূর্য উদয় অস্তে গমনাগমন করে। অতএব আপনার মৃতদেহে প্রাণসঞ্চারের কথাটি সরাসরি বেদের বিরুদ্ধ মন্তব্য। এখন পর্যন্ত বহুবার আপনারা "বেদবচন বিরুদ্ধ" বহু কথা বলেছেন , শুধুমাত্র মুখে বেদ বেদ চেঁচিয়েই নিজেদের বড়ো জ্ঞানী মনে করেন।

(৫.)আমরা ভগবান শ্রীরাম -শ্রীকৃষ্ণ ইত্যাদির আচরণকে মানি , যজ্ঞ করি । ভগবান শ্রীকৃষ্ণও তো যজ্ঞ করতেন !

#খন্ডন:- ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যজ্ঞহোমাদি করতেন সত্য কথাই ,মূর্তিপূজকেরাও অগ্নিহোত্র যজ্ঞ করেন । ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা যখন বললেন তবে তৎসম্বন্ধিত কিছু উদাহরণই পেশ‌ করছি--

১.রাজধর্মঅনুশাসন পর্ব ৫১তম অধ্যায়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নিজেই সাকার রূপে ভীষ্মকে "দিব্য লোক"এর প্রাপ্তির মার্গ সম্বন্ধে বলেছেন।যা(দিব্যলোক) আপনারা কল্পনা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। ২.ভীষ্ম পর্ব ৩৬ তম অধ্যায়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সাকার নিরাকার উভয় সাধনেরই উপদেশ দিয়েছেন যা আপনারা জেনেও মানেন না। ৩.মহাভারত অনুশাসন পর্বের দানধর্ম পর্বের ১৪ অধ্যায়ের ৩৭৭ ....৩৯৩ শ্লোকে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ হরপার্বতীর স্তুতির বর্ণনা করেছেন, কিন্তু আপনারা তো শিব দূর্গাকে মানেনই না। ৪. মূর্তিপূজার বিরোধে যে ভুল অর্থ করে "অন্ধং তমম প্রবিশন্তি" ইত্যাদি ভুল বেদশ্লোকের প্রমাণ দেন তাতে তো গোবর্ধন পূজার প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণও আপনাদের দৃষ্টিতে পাপীই হলেন? তাই না !! ৫.ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বর্ণাশ্রমধর্মের উপদেশের থেকে আপনাদের সংস্থার বর্ণাশ্রম অনেক ভিন্ন। এখানেও আপনারা ভগবানকে একপ্রকার অবহেলা করলেন।আসল কথা এই যে বিশুদ্ধ বর্ণাশ্রম ধর্মের পালন করতে বসলে সবার আগে আপনার সংস্থাতেই তালা লেগে যাবে সুতরাং নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য শ্রীকৃষ্ণের অপমান হচ্ছে তো হোক তাতে আপনাদের কিছু যায় আসে না। ৬.আর সবচেয়ে বড় কথা স্বয়ম্ যিনি উদাত্ত কণ্ঠে নিজেকে ঈশ্বর বলেছেন সেই শ্রীকৃষ্ণ কেও আপনারা "মহাপুরুষ মাত্র" বলে মানেন। এমন উদাহরণ অনেক আছে যা আপনাদের খন্ডন যোগ্য।

(৬.)মূর্তিতে ইঁদুর প্রভৃতি প্রাণীরা অত্যাচার করে!! #খন্ডন:- ভগবান তার ভক্তের ভক্তি যাচাই করেন,এটিও তার এক লীলা।যাহোক ইঁদুরকে প্রসাদ খেতে দেখে পরম পূজ্য দয়ানন্দ স্বামীর ভগবানের মূর্তির ওপর থেকে একেবারে বিশ্বাসই উঠে গেল !! যেখানে একজন ইষ্টনিষ্ঠ ভক্তের আস্থা আরো দৃঢ় হওয়া উচিত । (৩নং প্রশ্নটি পড়ুন)

সাধারণত পূজাস্থল স্বাভাবিক ভাবেই অত্যন্ত শুদ্ধ পবিত্র থাকে সুতরাং সেখানে ইঁদুর বা অন্য কোনো কীট ইত্যাদির কিছু অশুদ্ধ করার কথাটাই অসঙ্গত,তথাপিও কোনো স্থানে যদি এমন হয়েও থাকে তাহলে "চেতনাম্ অস্মি সর্ব ভুতানাং" "সর্বং খ্বলিদং ব্রহ্ম" হরি ভৃগু আদি প্রসঙ্গের কথা আশা করি জানবেন।তার সাথেই আমাদের সংবিধান মনুস্মৃতিতেও পশুপাখি এমন কিছু করলে প্রতিশোধে তাদের ক্ষতি করার কোনো বিধান দেওয়া নেই কিন্তু যদি কোনো দুর্মতি মানুষ মন্দির বা বিগ্রহের ক্ষতিসাধন করে তবে সেক্ষেত্রে তাকে দন্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে।

এখন আপনারা তো পারলে মনুস্মৃতিকেও অবৈদিক গ্রন্থ বলবেন,তার সাথে মূর্তি মন্দির বিষয়ক শব্দ গুলোরও অন্য অর্থ তৈরী করবেন। খলের তো আর ছলের অভাব হয় না !!!

সবশেষে ঈশ্বর আপনাদের সদমতি দিক এটাই প্রার্থণা।এভাবে হিন্দু হয়েও প্রতিনিয়ত নিজ ধর্মের যেভাবে ক্ষতিসাধন করে চলেছেন তাতে আপনাদের ইসলামিককরণের মানসিকতাই প্রকাশিত হচ্ছে।

বেদমন্ত্রের সত্যাতাকে যাচ্ছেতাই বিকৃত করে মূর্তিপূজার নিষেধ সিদ্ধ করতে পূর্বেও অনেক প্রয়াস করে বারবার নিরস্ত হয়েছেন তবুও আপনারা পথে আসবেন না, চিরকাল দ্বন্দলড়াই করেই নিজের ও জাতির ক্ষতি করবেন।

অতএব মূঢ়তা ত্যাগপূর্বক অন্যসম্প্রদায়ের নিন্দাচর্চায় ব্যর্থ সময় অপচয় না করে সকলকে সুস্থ থাকতে দিন।

#শ্রী_সঞ্জয়_গোঁসাই (নিখিলবঙ্গ ধর্মচক্র পীঠপরিষদ)

#সকলের বোধগম্যতার জন্য সরলভাষ্যে প্রকাশিত হইল। নিজেও সত্যকে জানুন তৎসহ #শেয়ারের মাধ্যমে অন্যের ভ্রান্তি নিরসনেও সহায়ক হউন।


 
 
 

1 Comment


SUJAL GAMING 50K
SUJAL GAMING 50K
Jan 19, 2023

দম থাকলে আর্য সমাজের সাথে শাস্ত্রার্থ করে দেখান হাগু বেরিয়ে যাবে......🤣🤣🤣

Like
Post: Blog2 Post

Subscribe Form

Thanks for submitting!

  • Facebook
  • Twitter
  • LinkedIn
  • Facebook

©2020 by Vedicarya. Proudly created with Wix.com

bottom of page