সিদ্ধার্থ গৌতম বুদ্ধ কি দশাবতার এর মধ্যে একজন?? (আসুন সত্যকে জানি! মিথ্যা বর্জন করি!)
- Krishnashish Chakraborty
- Dec 23, 2020
- 2 min read
প্রশ্ন - সিদ্ধার্থ গৌতম বুদ্ধ কি দশাবতার এর মধ্যে একজন??
প্রশ্নের উত্তরে - পুরীপীঠাধীশ্বর জগৎগুরু শঙ্কারাচার্য স্বামী নিশ্চলানন্দ সরস্বতী'জী:-

প্রথমত, বুদ্ধ দুজন জন্মেছেন; একজন যিনি ভগবান বিষ্ণুর দশাবতারের অন্তর্ভুক্ত ব্রাহ্মণ কূলজাত ভগবান বুদ্ধ ও অপরজন নেপালের ক্ষত্রিয় রাজ বংশে জাত রাজকুমার যিনি পরবর্তীতে বুদ্ধ হন। যত কর্মকান্ডী ভারত, নেপাল ও ভুটানে থাকেন তাঁরা যে 'বৌদ্ধাবতারের' কথা বলেন তা কোন বুদ্ধ সেটার সম্মন্ধে তাঁদের অনেকেরই সঠিক জ্ঞান নেই। একজন বুদ্ধ নেপালে জন্মেছিলেন ক্ষত্রিয়কুলে ও ওনার শ্বশুরকুল ছিল নেপালেই যদিও উনি সিদ্ধি 'বুদ্ধগয়া' তেই প্রাপ্ত করেছিলেন এমনটাই উল্লেখিত। কিন্তু, 'ভবিষ্যপুরান' অনুযায়ী যদি বিচার করা হয়, তাহলে প্রকৃত ভগবান বিষ্ণুর ও অবতার গৌতম গোত্রজ 'বুদ্ধ' ব্রাহ্মণকুলে জন্মগ্রহণ করেন। 'বৌদ্ধাবতার' এর জন্ম ক্ষেত্র ভবিষ্যৎ-গতির নিরিখে শ্রীমদ্ভাগবতে কথিত আছে , "কীকটেষু ভবিষ্যতি"।― 'কীকটে' ভগবান বিষ্ণু বুদ্ধাবতার হিসেবে জন্মগ্রহণ করবেন। 'কীকট' শব্দের প্রয়োগ 'ঋগ্বেদ'-এও করা হয়েছে এবং বেদের সর্বোমান্য প্রাচীন ভাষ্যকার সায়নাচার্যের ভাষ্যে বলা আছে,- দেশ বা ক্ষেত্রের নাম 'কীকট'। পঞ্চদশ শতকের পুরীপীঠ গোবর্ধনমঠের বিখ্যাত শঙ্করাচার্য্য শ্রীধর স্বামী শ্রীমদ্ভাগবত এর ওপর টিকা ভাষ্য লেখেন যা আজও গোটাবিশ্বে ও পন্ডিতমহলে শ্রীধরী টীকা নামে চর্চিত, সমাদৃত এবং সর্বোৎকৃষ্ট বলে বিবেচিত। চৈতন্য চরিতামৃত থেকে জানা যায়;- চৈতন্য মহাপ্রভু এই আচার্য শ্ৰীধর স্বামীর ঐকান্তিক গুণমুগ্ধ ভক্ত ছিলেন এবং এই শ্রীধরী টীকা ভাষ্যকেই উনি সর্বোৎকৃষ্ট ও সঠিক ভাগবত ব্যাখ্যা বলে মানতেন। এই সর্বোমান্য শ্রীধর স্বামীর টীকা ভাষ্য থেকে জানা যায় 'কীকট' এর অর্থ 'গয়াক্ষেত্র'। আমি ১০ বর্ষ পূর্বে এখানে বিশিষ্ট বিদ্বানদের সামনে প্রমানের দ্বারা ঘোষণা করেছিলাম;- যেমন 'পুরুষোত্তম ক্ষেত্র' তাঁর অন্তর্গত হচ্ছে পুরী ; তেমনই কীকটক্ষেত্রের অন্তর্গত হচ্ছে গয়া। কিন্তু ভারতের হিন্দু বিদ্বেষী সেকুলার পন্থী শাসনতন্ত্র তথ্য প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও সঠিক তথ্য জন সমক্ষে আনতে নারাজ। কিছু বিশিষ্ট মহানুভব ইতিহাস গবেষক ৪ বৎসর পূর্বে গয়াতে একটা টিলার ওপর প্রায় ২৮০০ বছরের অধিক প্রাচীন ব্রাহ্মণদের গ্রাম আবিষ্কার করেন সেখানে ভগবান বুদ্ধের সর্ব প্রাচীন মূর্তি পান। কিন্তু ভারতের সেকুলার শাসনতন্ত্র এই আবিষ্কারকে প্রকাশ্যে মান্যতা দিতে নারাজ, যদিও বিদেশে কিছু ম্যাগাজিনে এই তথ্য প্রকাশিত হয় যায়।
আমি একটা সংকেত করছি,- অগ্নিপুরানে ভগবান বুদ্ধের ধ্যান মন্ত্রের মাধ্যমে তাঁর রূপ বর্ণিত হয়েছে; বিষ্ণুর অবতার ব্রাহ্মণকুলজাত ভগবান বুদ্ধের ধ্যান অনুযায়ি ভগবান বুদ্ধের যে রূপ হতে পারে তার বিগ্রহ বানিয়ে রেখে দিল সিদ্ধার্থের অনুসারী হিসেবে দাবিদার ধর্মব্যবসায়ী তথাকথিত বৌদ্ধরা এবং তা সিদ্ধার্থ বুদ্ধের মূর্তি বলে প্রচার চালিয়ে গেল তৎকালীন সনাতন ধর্মদ্রহী, ধর্মত্যাগী রাজাদের সৌজন্যে।
দ্বিতীয়ত, অমর সিংহ (বৌদ্ধ পন্ডিত ছিলেন) যিনি 'অমরকোষ' এর রচনা করেন। তিনি খুব চালাকির সাথে ভগবান বুদ্ধ ও গৌতম বুদ্ধের নাম একসাথে লিখে দিলেন। আবার মাঝখানে একটা বিভাজক শব্দের প্রয়োগ করলেন কিন্তু সেই শব্দের অর্থ শাসনতন্ত্রের বশীভূত মন্য ঐতিহাসিক গণ জ্ঞাতব্য করেনি যাঁর ফলস্বরূপ আজ ব্রাহ্মণকুলে জন্মগ্রহণ করা ভগবান বুদ্ধকে সবাই ভুলে গেছে ও তাই দুর্ভাগ্য বশত সিদ্ধার্থ গৌতম বুদ্ধকেই ভগবানের তকমায় চড়িয়ে সনাতন সমাজ চর্চা করছে। আরেকটি কারণ আছে , দুই বুদ্ধেরই গোত্র গৌতম ছিল ; ক্ষত্রিয় ও ব্রাহ্মণের গোত্র ঋষিদের নামের আধারেই চলে তাই এই কারণেই আমরা প্রকৃত ভগবান বুদ্ধকে তা ভুলে যাই। আমাদের সব বর্ণে উৎপন্ন মহাত্মাদের ওপরই আদর ও সদ্ভাব আছে , আদর্শ যে কেউ হতে পারে। আমরা কি ভগবান রাম ও কৃষ্ণ কে ব্রাহ্মণকুলে জন্মগ্রহণ করেছে এটা সিদ্ধ করবো? কখনই না, তাদের জন্ম ক্ষত্রিয়কুলে হলেও, আমাদের আরাধ্য ওনারা সদা সর্বদা, তাঁরা আমদের কাছে ভগবানের অবতার।
কিন্তু সনাতনের ইতিহাসকে পৈশাচিক সেকুলার কূটনীতির দ্বারা প্রকৃত প্রামানিক সত্য তথ্যের গলা চিপে হত্যার মরিয়া প্রচেষ্টা অত্যন্ত কুৎসিত ও নিন্দনীয়।।
[ অনুবাদে:- সুপ্রতিম চক্রবর্তী ]
প্রচারে:- #ধর্মচক্র
コメント